Blog

  • Lucy
  • Tips and Tricks
  • চুলের যত্নে কালিজিরা, নারকেল ও জলপাই তেল!

চুলের যত্নে কালিজিরা, নারকেল ও জলপাই তেল!

সময়টা শীত হোক কিংবা গ্রীষ্ম, খানিকটা অযত্নে আপনার সুন্দর চুলগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পরতে পারে যেকোন আবহাওয়াতেই। চুলের প্রতি অবহেলা করতে দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষকেই। অথচ, চুল আমাদের সমস্ত সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অংশ হিসেবে কাজ করে। প্রত্যেকটি মানুষই চায় নিজেকে সুন্দর করে তুলতে। তাহলে আপনি কেন তার বাইরে থাকবেন? কোন রাসায়নিক সংস্পর্শ ছাড়াই প্রাকৃতিক উপাদানের মাধ্যমে চুলের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে ভেবেছেন কখনো? কালিজিরার তেল, জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল এবং নারিকেল তেল- এই তিনটি তেল আপনার চুলকে করে তুলতে পারে অনেক বেশি সুন্দর, কমনীয় এবং মজবুত। এছাড়াও চুলের নানারকম সমস্যার সমাধান হিসেবেও আপনি ব্যাবহার করতে পারেন এই তিনটি তেলকে। আর এই তিনটি উপাদানই আপনি এখন একসাথে পাবেন লুসি গোল্ড হেয়ার অয়েলে। চলুন চুলের যত্নে কালিজিরা, জলপাই এবং নারিকেল তেলের প্রভাবের কথা জেনে নেওয়া যাক।

১। নতুন চুল গজানো

একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর মানুষের মাথার চুল অনেকটাই পাতলা হয়ে যায়। তবে অনেকসময় হরমোন আর পরিবেশগত সমস্যার কারনে এই চুলপড়া ঘটে খুব কম বয়সে এবং খুব দ্রুত। বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি বেশ ভয়ের। এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে আর নতুন চুল গজানোর জন্য অনেকেই বিভিন্ন শ্যাম্পু ও তেল ব্যবহার করেন। তাতে কোন উপকার হবে কিনা সেটা নিশ্চিত জানা না গেলেও অলিভ অয়েল এবং কালিজিরার তেল আপনাকে নতুন চুল গজানোর নিশ্চয়তা দেবে। সঠিক ফলাফল পাওয়ার জন্য সমপরিমাণ লুসি গোল্ড হেয়ার অয়েল ও কালিজিরার তেল মিশিয়ে বা লুসি গল্ড হেয়ার অয়েল নিয়ে সেটা আঙ্গুলে করে চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর একটি নরম তোয়ালে হালকা গরম পানিতে চুবিয়ে নিয়ে পানি ঝড়িয়ে চুল মুড়িয়ে মাথায় ৪০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার মতো লাগিয়ে রাখুন। সপ্তাহে দুইদিন কাজটি করার চেষ্টা করুন। দেখবেন, নতুন চুল গজাতে শুরু করেছে।

২। চুলকে ময়েশ্চারাইজ করতে

পর্যাপ্ত ময়েশ্চারাইজার ছাড়া চুল হয়ে পড়ে রুক্ষ ও শুষ্ক। চুলের এই সমস্যা দূর করতে শ্যাম্পু করার আগে ভালো করে চুলে লুসি গোল্ড হেয়ার অয়েল দিন। এরপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এতে আছে ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ। যার সবগুলোই চুলের কেরাটিন বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে চুল হয়ে ওঠে অনেক বেশি সতেজ ও প্রাণবন্ত।

৩। চুলে লেগে যাওয়া রঙ ওঠাতে

হেয়ার ডাই নয়, বলা হচ্ছে সাধারণ রঙয়ের কথা। অনেকসময় ঘরে রঙ করার সময় চুলে রঙয়ের ছিটে লেগে যেতে পারে। সেইসাথে চুলে আঠালো কোন পদার্থ কখনো লেগে গেলে সেক্ষেত্রে আপনি ব্যবহার করতে পারেন লুসি গোল্ড হেয়ার অয়েল। জলপাই তেল খুব সহজেই চুলের এই উঠতে না চাওয়া ময়লাগুলোকে দূর করে দেয়।

৪। পাকা চুল কমাতে

বয়স হলে চুল পাকবেই। কিন্তু চুলের রঙ ইচ্ছে করলে আপনি অনেকটা দিন কালো হিসেবেই রাখতে পারেন। কীভাবে? খুব সহজ। কালিজিরার মাধ্যমে। কালিজিরার তেল চুলের সেই কোষগুলোকে পুনরজ্জীবিত করে তোলে যেগুলোর কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণেই চুলের রঙ সাদা বা ধূসর হয়ে পড়ে। বাড়তি কোন চাপ সৃষ্টি ছাড়াই এটি চুলের রঙ বজায় রাখে আরো অনেকদিন। তাই লুসি গোল্ড আপনাকে এদিক দিয়েও যথেষ্ট সাহায্য করবে।

৫। খুশকি প্রতিরোধে

এই সমস্যাটি কমবেশি সবারই থাকে। আর সেটি হলো খুশকির সমস্যা। খুশকির হাত থেকে রেহাই পেতে অলিভ অয়েল হতে পারে মোক্ষম উপায়। এ জন্য লুসি গোল্ড হেয়ার অয়েলের সাথে খানিকটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে ফেলুন। ১৫-২০ মিনিট এভাবেই রেখে দিন। এরপর মাথা ভালো করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। কয়েক সপ্তাহ এমনটা করলেই দেখবেন খুশকির সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। তবে লেবুর রস না থাকলে সমপরিমাণ বাদামের তেল এবং অলিভ অয়েল মিশিয়েও কাজটি করতে পারবেন আপনি।

৬। উস্কোখুস্কো ও ফাটা চুল দূর করতে

বিশেষ করে শীতকালে এই সমস্যা প্রায় সবার ক্ষেত্রেই দেখা দেয়। যত চেষ্টাই করা হক না কেন, চুল হয়ে পড়ে এলোমেলো। আর চুলের ডগাও কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পেতে লুসি গোল্ড হেয়ার অয়েল ব্যবহার করতে পারেন আপনি। হাতে খানিকটা তেল নিয়ে আঙ্গুলগুলো চিরুণীর মতো করে চুলের মধ্য দিয়ে নিয়ে যান কয়েকবার। এরপর চুল আচড়ে নিন। দেখবেন এরপর আর বাইরে বের হলেও চুল একদম ঠিকঠাক আকৃতিতেই থাকছে। তবে আপনার চুল যদি সবসময়েই শুষ্ক থাকে এবং আপনি যদি চান এই সমস্যাকে একেবারের মতো দূর করতে, তাহলে অলিভ অয়েল পুর চুলে মাখিয়ে নিন। এরপর সেটাকে কমপক্ষে ৩০ মিনিটের মতো রেখে দিন। দেখবেন কিছুদিন এমন করলেই আপনার চুল তার হারিয়ে যাওয়া ময়েশ্চার ফিরে পেয়েছে।

৭। তালুর চুলকানি প্রতিরোধে

অনেকসময় মাথায় খুশকি না থাকলেও মাথার তালু চুলকাতে থাকে। এই সমস্যা থেকে খুব সহজেই আপনি দূরে থাকতে পারবেন যদি খানিকটা নারকেল তেল আপনার কাছে থাকে। এজন্য আপনাকে নারকেল তেলের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। এটি কেবল আপনার মাথার ত্বককে সুন্দর করে তুলবে না, সেইসাথে চুলকানি প্রতিরধ করে, চুলকে করবে কোমল। এছাড়া খুশকি এবং চুল অকালে পেকে যাওয়ার মতো নিত্যদিনের সমস্যাগুলোর হাত থেকেও মুক্তি দেবে।

৮। চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে

নতুন চুল গজানোই সবকিছু নয়। আপনার মাথায় প্রচুর চুল আছে কিন্তু সেগুলো বাড়ছে না? এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে আপনাকে সাহায্য করবে অলিভ অয়েল। এজন্য এক কাপ লুসি গোল্ড হেয়ার অয়েলের সাথে আধা কাপ মধু মিশিয়ে চুলায় মৃদু আঁচে বসিয়ে নিন। মিনিট চারেক মতো রাখুন। এরপর মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে চুলে আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ব্যবহার করুন। এভাবে কয়েক সপ্তাহ একই কাজটি করে দেখুন। দেখবেন, আপনার চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছে।

৯। চুলের নতুন জীবন

নির্দিষ্ট কোন একটি কারণ নয়, যদি আপনার চুল প্রায় সব রকমের সমস্যা থেকেই ভুগে থাকে এবং কোন তেলেই কোন কাজ না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে অলিভ অয়েলের একটি প্যাক আপনার অসম্ভব কাজে আসতে পারে। অতিরিক্ত শুষ্ক, রুক্ষ, সংক্ষিপ্ত, ফেটে যাওয়া এবং বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত আপনার চুলকে যদি আপনি নতুন জীবন ফিরিয়ে দিতে চান, তাহলে এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করে দেখতে পারেন। এই ক্ষেত্রে, আপনাকে প্রথমে একটি অ্যাভোকাডো নিতে হবে। এর মাংসল অংশগুলো বের করে এনে ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। খেয়াল রাখুন যেন সেটি ভালোমত ব্লেন্ড হয়। এরপর তাতে একটি ডিম ও অলিভ অয়েল ঢালুন। আবার ব্লেন্ড করুন। ব্যস! তৈরি হয়ে গেল আপনার কাংক্ষিত হেয়ার প্যাক। তবে এটি ব্যবহার করার আগে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। তারপর ভেজা চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত মিশ্রণটি লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর সেটা পানি দিয়ে চুল থেকে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুল তার প্রয়োজনীয় ময়েশ্চার ফিরে পাবে খুব তারাতাড়ি।

আপনার চুলের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল করেছেন কখনো? কেমন আছে আপনার সুন্দর চুলগুলো? মনমরা দেখাচ্ছে না তো সেগুলোকে? তেমনটা হলে যাচাই করে দেখুন উপরের কৌশলগুলো। আর হাতে খুব বেশি সময় না থাকলে বাজার থেকে দেখেশুনে সঠিক লুসি গল্ড হেয়ার অয়েল কিনে ফেলুন আর সাজিয়ে নিন নিজের চুলকে নতুন সাঁজে!